সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

2019 থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

জবাবদিহি

আমি হিন্দু, ভগবানে বিশ্বাসী, রোজ কালী ঠাকুরের কাছে মাথা নত করি, ভয়ে নয়, ভালোবেসে। এবং ঠিক সেই কারণেই, পুরোপুরি কমুনিস্ট হয়ে উঠতে পারিনি কোনোদিন।  কমিউনিস্টদের প্রথম শর্ত হলো ভগবানে বিশ্বাসী হলে এখানে তোমার ঠাঁই নেই।  তা বেশ, আমি না হয় ব্রাত্য হয়েই থাকবো, আমি নাহয় সারাজীবন তোমাদের সভার গন্ডি পেরিয়ে অনেক দূরে বসে তোমাদের কথা শুনবো। কিন্তু শুনবো, কারণ তোমাদের কথা আমার সত্যি বলে মনে হয়।  আমি সেই হিসাবে কমিউনিস্ট, সে তোমরা আমায় স্বীকার করো, বা না করো।  মা কালী আমার হৃদয়ে বিরাজমান থাকুক, তোমরা  আমার  মাথায় থাকো।   আমি সাংবাদিক, চেষ্টা করি এপলিটিক্যাল থাকার। কারণ সেটাই আমার স্বধর্ম। যেখানে অন্যায় হবে, তার প্রতিবাদ করা আমার স্বধর্ম।  যেহেতু আমি ফিনান্সিয়াল সাংবাদিক, আমি আমার মতো করে প্রতিবাদ করি।  আমার লেখায় আমি আমার পাঠকদের কাছে তুলে ধরি সরকারি অক্ষমতাগুলো। আবার যেটা ভালো, সেটাকেও আমি প্রশংসা করি। আমার কেরিয়ারের শুরুতে আমায় যেটা শিখিয়েছিলেন আমার সিনিয়াররা, আমি সেটাই অনুসরণ করে এসেছি, সেটাই করবো। এবং আমার কাছ থেকে কোনো নবীন সাংবাদিক যদি জানত...

একদিন

একদিন হঠাৎ করে চলে যাবো জেনো শিশির যেমন মিলায় ভোর রাতে বাঁচবে তুমি নিজের মতন করে নতুন খেলায় উঠবে তখন মেতে ভাববে আগেই গেলাম না কেন যেদিন আঘাত পেয়ে নরম হবে মন তখন তুমি মূর্তি গড়ার এঁটেল মাটির জন আঘাত দিতে বাজবে তখন ব্যাথা সেদিন তুমি শুনবে তারার কথা আমার কণ্ঠ পাও যদি তার মাঝে চোখের কোণ জমবে উষ্ণ সাঁঝে জানবে সেদিন আঘাত পেয়েও হাসে কেন কেউ কেউ বার বার ভালোবাসে সেদিন তুমি খুঁজবে আমায় খুব বুকভরা অভিমানে নির্বাক নিশ্চুপ মনটা অচল সেই কথাটিই ভেবে কেই বা তোমার আঘাত খুঁজে নেবে সেদিন হালকা হাওয়ায় আলতো ছোবো নিজে জানি, আঘাত করেই ভালোবেসেছ যে 

গোধূলির মুহূর্তগুলো

আমার সাংবাদিকতার আর কটা দিন মাত্র বাকি। সমস্ত জায়গা থেকে সাংবাদিকদের চাকরি যাচ্ছে, খবরের কাগজের অবস্থা খুব শোচনীয়। এরকমটি ভাবি নি। ভেবেছিলাম, সাংবাদিকতা করেই জীবন কেটে যাবে। মাঝখানে এসে যে রাস্তা বদল করতে হবে, তা জানলে হয়তো .... অবশ্য কি বা আর করতাম, লেখা লেখি ছাড়া তো আর কিছুই জানি না। জানতে ইচ্ছেও জাগে নি কোনোদিন, জানার তাই চেষ্টাও করিনি। এখন যখন সংসারপাতি পেতে বসেছি, এই দিশাবদল অনেকটাই দিশেহারা করে দিচ্ছে। মাঝে মধ্যে এখন পুরোনো দিনের কথা মনে পড়ে। আমি চাকরি করতে চলে যাচ্ছি সুদূর শিলংয়ে, পীঠে একটা ক্যানভাসের বেডিং, মোটা চামড়ার বেল্ট দিয়ে বাঁধা। পেছনে গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে মা আর বোন। ছলছল চোখ তাদের। মা ভীষণ কেঁদেছে তার আগে, আমিও একটু কেঁদেছি। সেটা মাকে ছাড়ার দুঃখে, নাকি মাকে দেখিয়ে অভিনয়, নাকি নতুন জীবনের অনিশ্চয়তার ভয়ে, সেটা আজ আর ঠিক মনে নেই। শুধু মনে আছে, আমি পিছন ফিরে তাদের দিকে তাকাই নি। সাইকেল রিকশা আমায় নিয়ে মন্থর গতিতে গড়িয়ে চললো বড় শিবমন্দির পার করে কোননগর স্টেশনের দিকে। আমি ভেসে পড়লাম।  অনেক পরে এটা নিয়ে একটু অতিরঞ্জিত একটা কিছু লিখেছিলাম আমার ব্লগে। The bo...

আমার ওয়াশিংটন যাত্রা -- ১

এপ্রিল মাসের সাত তারিখে আমি আমার নতুন কেনা সুটকেস নিয়ে মুম্বাই এয়ারপোর্টের দিকে রওনা হলাম।  প্রথম বার বিদেশের মাটিতে পা রাখবো। তাও আবার ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা। মনের মধ্যে একটা ঢিপঢিপানি যে ছিলনা তা বলবো না, কিন্তু আমি খুব একটা বেশি কিছু উত্তেজিতও ছিলাম না।  আমার সারা জীবন ধরে, আমার প্রতিটি মুহূর্ত জুড়ে আছে এখন আমার মেয়ে। তাকে ছেড়ে সাত দিন থাকতে হবে ভেবে ঠিক শান্তি পাচ্ছিলাম না। আরও মনে হচ্ছিলো, মেয়েটা আমাকে ছেড়ে  থাকবে  কি করে ।  আমার ভুঁড়ির ওপর পা তুলে তবেই তার ঘুম।  রাত্তিরে জেগে থাকে আমার অফিস থেকে ফেরার পথের দিকে তাকিয়ে।  অবশ্য ওর খারাব থাকার কথা নয়, ওর মা তো আছেই, সাথে আছে ওর পুয়া, মানে আমার মা, আমি যাবার প্রথম দুদিন আমার বাবাও থাকবেন ।  ওনারা কোন্নগর থেকে এসেছেন আমাদের সাথে দিন কাটাবে বলে আর তার সাথে আমার অনুপস্থিতে আমার পরিবারের সাথে থাকতে।   তবু, স্বার্থপরের মতো ভাবতে ভালো লাগে আমি না থাকলে মেয়ের খুব কষ্ট হবে।   আমি সাংবাদিক, সামান্য মাইনেতে  মুম্বাই তে ঘর করে উঠতে পারিনি, অনেক দূরে ডম্বিভ্লি নামক...

ছোটবেলার পরীরা

যখন খুব ছোট ছিলাম, তখন দূরের ল্যাম্পোস্টের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকাটা আমাদের খুব প্রিয় এক এডভেঞ্চার ছিল। আমি আর আমার বোন গুড়ি সুড়ি মেরে রাত্রিবেলায় উঠে পর্দাটা সরিয়ে গাল ঠেকাতাম জানালার শীতল লোহার গ্রিলে।   বাবা মা অঘোরে ঘুমাতো, কিন্তু আমরা দুজন ঠিক উঠে পড়তাম কোনো এক অজানা কারনে। দূরের ল্যাম্পোস্টের আলোটা বোধয় আমাদের ভেতর এক এলার্ম ঘড়ি জাগিয়ে তুলতো।  নিজেদের খুদে শরীরগুলোকে জানালার লোহার গ্রিলের সাথে চিপকে দিয়ে, চোখের দৃষ্টিকে ছুড়তাম অনন্তের দিকে। ল্যাম্পোস্ট গুলো সকালে কেমন বিচ্ছিরি পাতাছাড়ানো তালগাছের মতো চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। রাত্রে সবাই ঘুমিয়ে গেলে হঠাৎ করে তারা যেন প্রাণ পায়। একে ওপরের সাথে তারা আলো ছুড়ে কথা বলে। আমরা চোখ টেনে চেষ্টা করতাম একদম শেষের পোস্টটা দেখার। জানতাম, বৃথা সে প্রচেষ্টা। তবু, মানুষদের পৃথিবীটা যেখানে শেষ হয় আর বেম্মদত্তি বা শাঁকচুন্নির দুনিয়া যেখান থেকে শুরু, সেই প্রায় ব্রজদাদের আমবাগান অবধি দৃষ্টি টেনে শেষে তন্ময় ভাবে তাকিয়ে থাকতাম মিটার সয়েক দূরের আমাদের সোজাসোজি আলোটার দিকে। তার পাশেই বাঁশবাগান, তারপ রাস্তাটা বেঁকে বাম দিকে রওনা দিয়েছে। জো...